
প্রকাশিত: Tue, Jan 17, 2023 1:32 PM আপডেট: Sun, Jun 8, 2025 4:40 AM
মুক্তিপ্রতীক্ষিত ‘ফারাজ’-এ আমার সম্পৃক্ততা এবং ‘শনিবারের বিকেল’র মুক্তির গান
নুরুজ্জামান লাবু
২০১৯ সালের কোনো একিদেনর কথা। সিনিয়র সাংবাদিক মোর্শেদ আলী খান ভাই আমার বইটা (হোলি আর্টিজান : একটি জার্নালিস্টিক অনুসন্ধান) খুঁজতেছিলেন। একদিন তাঁর সঙ্গে কথা হলো। বইটা তখন মার্কেট আউট। আমার কাছেও অতিরিক্ত কপি নাই। তবু অনেক কষ্টে একটা বই যোগাড় কইরা তাঁর কাছে পাঠাইলাম। তারপর মাস ছয়েক পর মোর্শেদ ভাই আমারে ফোন করলেন। বললেন, বইটা চেয়েছিলেন তাঁর বন্ধু, বলিউডের বিখ্যাত প্রযোজক-পরিচালক মহেশ ভাট। মহেশ ভাটের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ভিশেষ ফিল্মস থেকে আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। আমার মোবাইল নাম্বারটা দেবে কিনা? আমি বললাম, দেন ভাই। সমস্যা নাই। তারপর একদিন ভিশেষ ফিল্মস-এর দুই কর্মকর্তার সঙ্গে আমার কথা হইলো। কথা হইলো মহেশ ভাটের ভাই মুকেশ ভাটের মেয়ে সাক্সেনা ভাটের সঙ্গেও। তাদের ভাষ্য, তারা আমার বইটা সংগ্রহের পর ইংরেজিতে অনুবাদ করাইছেন। তারপর পড়ছেন। বইটা যে ইনফরমেটিভ তাঁর প্রশংসাও করলেন।
তারা হোলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলা নিয়া একটা মুভি বানাবেন। সেই জন্য আমার বইয়ের ইনফরমেশন ব্যবহারের জন্য একটা চুক্তি করতে চান। বই থেকে ইনফরমেশন নিয়া তারা তাদের মতো কইরা সিনেমার স্ক্রিপ্ট করবেন। আমি দুয়েক দিন চিন্তা-ভাবনা করলাম। তারপর টাকা-পয়সা নিয়াও কথা হইলো। আমি বলতে গেলে অল্প পয়সার বিনিময়েই তাদের সঙ্গে একটা চুক্তি কইরা ফেললাম। তো ২০২০ সালের সম্ভবত মার্চ মাসে ৩৬ পৃষ্ঠারর একটা চুক্তি হইলো ভিশেষ ফিল্মসের সঙ্গে। চুক্তিতে আমি সিগনেচার কইরা চুক্তিনামা পাঠাইলাম মুম্বাই। সেখান থেকে মুকেশ ভাট সিগনেচার করে পাঠালেন আমার কাছে। চুক্তিতে উল্লেখ ছিল, এই সিনেমা বানানোর তথ্য আমি তাদের পাবলিসিটির আগে প্রকাশ করতে পারবো না। এজন্য এতদিন কাছের দুয়েকজনরে বললেও ঘটা করে বলি নাই। ২০২০ সালের করোনা মহামারী শুরু হইলে সেই সিনেমা নির্মাণ ও মুক্তি ধীরগতিতে চলছিল। এর মধ্যেই অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী পেমেন্ট করে দিছিল তারা। এইখানে একটা কথা বলা আবশ্যকীয় যে, কাছের মানুষ অনেকেই আমারে বলেন, মাত্র তিন লাখ রূপী। এত অল্প টাকায় বইটার চুক্তি করলেন কেন? তাদের আমি বলি, আমার বইয়ের তথ্য নিয়া তারা চাইলে আমারে না জানাইয়াও মুভিটা বানাইতে পারতো। অর্থাৎ তারা মুক্ত উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে স্ক্রিপ্ট করতে পারতো। আমাদের দেশে তো এইরকমই হয়। কেউ কাউরে ক্রেডিট দিতে চায় না।
কিন্তু তারা যে সম্মান ও প্রফেশনালিজম দেখাইয়া আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন, এতেই আমি খুশি। টাকাপয়সা না দিলেও আমি রাজি হইতাম। সেই ছবিটা মুক্তি পাইতেছে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি। দুপুরে মুম্বাই থেকে ভিশেষ ফিল্মসের শাহিল হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ দিলেন। ট্রেইলারের লিংক দিলেন। বলিউডের কোনও একটা মুভিতে যে আমার মতো অতি সাধারণ একজন মানুষের সামান্যতম একটু সংযোজন আছে তা ভাইবা পুলকিত হইতেছি। আরেকটা বিষয়, যখন আমার সঙ্গে চুক্তি হয়, তখন ছবির নাম ঠিক হইছিল না। তবে এই মুভিতে যে হোলি আর্টিজানে অন্য সবার মতো নিহত ফারাজকে কেন্দ্রভূত কইরা তৈরি হবে, সেইটা অনুমান করছিলাম। কারণ ফারাজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ভিশেষ ফিল্মস কর্মকর্তাদের একাধিক মিটিংও হইছে, তারাই আমার বলছে। তবে বিনিয়োগ আছে কিনা আমি নিশ্চিত না। যদিও আমার বইয়ে আমি ফারাজরে আলাদা কইরা হিরোইজমের যে মিথ প্রচার করা হইছে তা নাকচ কইরা দিছিলাম।
কারণ এর কোনও প্রত্যক্ষদর্শী আমি পাই নাই। কে বলেছিল যে ফারাজকে জঙ্গিরা ছাইড়া দিতে চাইছিল, কিন্তু তাঁর দুই বান্ধবীরে ছাইড়া আসতে চায় নাই- এর কোনও উত্তর নাই। এইটা বানানো গল্প। ভিশেষ ফিল্মস, যদিও পরে তারা প্রযোজনায় অনুভব সিনহাসহ অন্যান্যদের সামনে আনছেন, তারা ফারাজরে হাইলাইট কইরা মুভিটা সম্পন্ন করছেন। ফারাজরে হিরো বানাইছেন। আমি এইসবের চাইতে এক্সাইটেড এইজন্য যে, বলিউডের কোনও একটা মুভিতে আমার সামান্যতম অংগ্রহণ আছে। চুক্তিপত্রে ক্রেডিট লাইনে আমার ও আমার বইটার নাম দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে। হয়তো মুভির অ্যান্ড টাইটেলে মাইক্রো সেকেন্ডের জন্য তা দেখা যাইতেও পারে। তাতেই আমি খুশি। অতএব আপনারা আমারে অভিবাদন জানাইতে পারেন। তবে দুঃখজনক বিষয় হলো, হোলি আর্টিজান বিষয় নিয়া বাংলাদেশে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ভাই একটা মুভি বানাইছেন। ‘শনিবারের বিকেল’ নামে সেই মুভি সরকার অকারণে আটকায়ে রাখছে। অবিলম্বে শনিবারের বিকেলের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানায়া গেলাম। জগতের সকল প্রাণির মঙ্গল হোক। সবার জন্য শুভকামনা। লেখক: সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে
আরও সংবাদ
চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে
‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!
কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!
সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি
ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
মতিউর প্রতিদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৩ ব্যাচের বন্ধুদের গ্রুপে সৎ জীবন যাপনের উপদেশ দিতেন!

চ্যাম্পিয়ন ভারত : একটা ছোট মুহূর্ত কতো বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে

‘ওই ক্যাচ হয়নি, সুরিয়াকুমারকে আবার ক্যাচ ধরতে হবে’!

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সংগীতাচার্য বড়ে গোলাম আলি খান, পশ্চিমবঙ্গের গর্ব সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও আমি

ইন্ডিয়ান বুদ্ধিজীবী, ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও দেশের বুদ্ধিজীবী-অ্যাক্টিভিস্ট
